পেশাদার পদ্ধতি

কোয়ালিটি এবং সুযোগের নিরিখে আর্থ স্টুডিওর ছবিগুলি দারুণ ভাল কিন্তু আপনার অ্যানিমেশনে এগুলি কেমন দেখতে লাগবে তা নির্ভর করে অনেকগুলি বিষয়ের উপর। আপনি যাতে সবথেকে ভাল ফলাফল পান তা দেখার জন্য আর্থ-এর উপগ্রহ ও 3D ছবি এবং তার সাথে সাথে আমাদের তরফ থেকে প্রোডাকশনের পরবর্তী পর্যায়ে দরকারি কিছু টিপ্স এবং কৌশল সম্বন্ধেও বিস্তারিতভাবে জানুন।

3D ছবি ব্যবহার করা

আর্থ স্টুডিওর শহরের 3D ডেটা পূর্ণ ক্ষমতার সাথে ব্যবহার করা হলে তা সিনেমার মতো, প্রায় ফটোরিয়েলিস্টিক অ্যানিমেশন তৈরি করতে পারে। নিম্নলিখিত পয়েন্টগুলি আপনাকে এই স্তরের কোয়ালিটি অর্জন করতে সাহায্য করতে পারে। আপনার বিষয়টিকে কীভাবে ফ্রেম করবেন এবং শটটিকে কীভাবে অ্যানিমেট করবেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এগুলিকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করুন।

3D শহরগুলি ঘুরে দেখুন

আর্থ-এর প্রায় পুরো অংশে ভূখণ্ডের 3D ডেটা (পাহাড়, উপত্যকা এবং অন্যান্য বড় মাপের ভৌগলিক ফিচার) আছে। কিন্তু বিস্তীর্ণ এবং সংখ্যায় বাড়তে থাকা শহরের কেন্দ্র এবং প্রাকৃতিক ল্যান্ডমার্কগুলির জন্য আর্থ আরও বেশি বিস্তারিত 3D জিওমেট্রি দেখায়। বিল্ডিং, ব্রিজ এবং এমনকি আলাদা আলাদা গাছগুলিকেও নির্ভুলতার সাথে দেখায়।

আপনি আর্থ স্টুডিওর মধ্যে থেকে সরাসরি 3D ডেটার সাহায্য সব শহর দেখতে পারেন। গ্লোবের উপর একটি ইন্টার‍্যাক্টিভ ম্যাপ ওভারলে করতে ভিউ মেনুর মধ্যে উপলভ্য 3D শহরগুলি বিকল্পে ক্লিক করুন।

খুব কাছে যাবেন না

আর্থ স্টুডিওর 3D ছবিগুলির রেজোলিউশন খুব ভাল কিন্তু আপনার ক্যামেরাটি যখন কম উচ্চতায় থাকে তখন ছবিগুলির স্পষ্টতার মাত্রার একটি সীমা থাকে। আর্থ-এর প্রত্যন্ত এলাকার ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে ঠিক।

আপনার শট ফ্রেম করার সময় এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন যা আপনার ক্যামেরাকে বিল্ডিং বা অন্যান্য ল্যান্ডমার্কের খুব কাছে নিয়ে আসে। আপনার রেন্ডারে অস্পষ্ট টেক্সচার থাকার মানে হল আপনি খুব কাছে চলে এসেছেন—আরও স্পষ্ট ছবি পেতে আপনার ক্যামেরাটিকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

স্ট্রিট লেভেল কোয়ালিটি

শহগুলিতে, টেক্সচার এবং মেশগুলির কোয়ালিটি স্ট্রিট লেভেলে যেমন হওয়া উচিত তার থেকে কম থাকতে পারে। ক্যামেরাটিকে জমির খুব কাছে বা দুটি বিল্ডিংয়ের মাঝে অ্যানিমেট না করার চেষ্টা করুন, কারণ এই কোণগুলি গঠনকে ভুলভাবে দেখাতে পারে।

ক্যামেরা খুব বেশি টিল্ট করবেন না

আপনার ক্যামেরার টিল্ট বেড়ে গেলে ফ্রেমে আরও বেশি জিওমেট্রি দেখা যাবে। পারফর্ম্যান্সের ভারসাম্য বজায় রাখতে আর্থ স্টুডিওকে 3D মডেল এবং টেক্সচার ডেটা কমাতে হবে। এর ফলে আপনার চুড়ান্ত অ্যানিমেশনে ছবির কোয়ালিটি কমে যেতে পারে।

সাধারণ নিয়ম হিসেবে, ক্যামেরা ৪০° থেকে ৬০° কোণের মধ্যে টিল্ট করা থাকলে শহরের 3D ডেটা সবথেকে ভাল দেখায়। কম উচ্চতার সমতলভূমি থেকে ছবিগুলি আসলে কীভাবে ক্যাপচার করা হয়েছে তার সঠিক আন্দাজ পাওয়া যায় এটি থেকে।

তাই বলা হয়, নিয়ম তৈরি করা হয়েছে ভাঙ্গার জন্য! আপনার শট তৈরি করার ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীল হয়ে উঠুন এবং সবথেকে ভাল ফলাফল অর্জন করতে কিছু বেশি সিনেমার মতো অ্যাট্রিবিউট-এর সুবিধা নিন।

উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি ব্যবহার করা

আর্থ স্টুডিওর গ্লোবটি সম্পূর্ণরূপে উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি দিয়ে তৈরি হয়েছে, এর বেশিরভাগ অংশের রেজোলিউশন খুবই বেশি। কোয়ালিটির আরও ভাল করতে এবং পৃথিবীর বর্তমান অবস্থা আরও ভালভাবে দেখাতে ছবিগুলি আপডেট করা হয়েছে। সবচেয়ে নতুন ছবিগুলি প্রায় এক থেকে তিন বছরের পুরনো।

ছবির কভারেজ বাস্তবে বিশ্বজুড়ে হলেও বিবরণের স্তর নির্ভর করে লোকেশনের উপর। কিছু লোকেশনে, আপনি বিবরণে পার্থক্য দেখবেন যা গ্লোবে স্বতন্ত্র বর্গ ক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ করা আছে। এগুলি হল ছবির টাইল যা আর্থ স্টুডিওর গ্লোবটিকে তৈরি করে।

ছবি টাইল করা

আর্থ স্টুডিওর সব ছবিকে ডেটার টাইলে ভাগ করা আছে। আপনি বড় টাইলে জুম করার সাথে সাথে সেই টাইলগুলি ছোট ছোট এমন টাইলে ভেঙ্গে যায় যেগুলিতে আর্থের আরও বেশি বিবরণযুক্ত ছবি থাকে। এর মানে হল যে গ্লোবের যেকোনও অংশে ছবির একাধিক টাইল থাকে। কিছু ছবির অনেক ভাগ থাকে (শহর এবং জনবহুল এলাকা) এবং কিছু ছবির কম ভাগ থাকে (প্রত্যন্ত অঞ্চল যেমন বরফে ঢাকা মেরু অঞ্চল)। কোন টাইলটি দেখানো হবে তা আর্থ স্টুডিও আপনার ক্যামেরার উচ্চতার ভিত্তিতে ঠিক করে।

কিছু কিছু সময়, আপনি আপনার রেন্ডার করা অ্যানিমেশনে দুটি ছবির টাইলের মাঝের জোড়া অংশটি দেখবেন—বিশেষ করে আর্থ-এর কম জনবহুল এলাকাগুলিতে। ছবির টাইলগুলিকে আলাদা আলাদা সময়ের ব্যবধানে আলাদা আলাদা বিবরণের স্তর সহ আপডেট করা হয়। তাই আপনি ছবির দুটি ডেটাসেট দেখতে পেতে পারেন যা আলাদা আলাদা বছরে আলাদা আলদা উপগ্রহ থেকে ক্যাপচার করা হয়েছে। আপনার অ্যানিমেশন যদি অনুমতি দেয় তাহলে উচ্চতা অ্যাডজাস্ট করে অন্য একটি টাইলসেট ব্যবহার করার জন্য আর্থ স্টুডিওকে চাপ দিন। এছা়ড়াও আপনি অপেক্ষাকৃত কম রেন্ডার কোয়ালিটি সহ রেন্ডার করার চেষ্টা করতে পারেন।

Google আর্থ সম্ভব হলে সবথেকে বেশি রেজোলিউশনের ছবি একত্রিত করে এবং জোড়, বিবর্ণতা এবং তার সাথে সাথে ছবির নির্দশন ঠিক করার জন্য কাজ করে। আপনি এখানে গিয়ে আরও বেশি জানতে পারেন।

কোয়ালিটি আরও ভাল করার জন্য সুপারস্যাম্পেলিং করা

মেশ এবং টেক্সচারের কোয়ালিটির স্তর নির্ধারণ করতে আর্থ স্টুডিও ফ্রেমের সাইজ ব্যবহার করে। এর মানে হল ডিফল্ট ১০৮০ পিক্সেল রেজোলিশনের থেকে বেশিতে রেন্ডার করা হলে ফলস্বরূপ অনেক বেশি ভাল কোয়ালিটির ডেটা পাওয়া যাবে—ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেক বেশি জিওমেট্রি এবং সামনে বেশি ভাল কোয়ালিটির মেশ।

ক্যামেরা নিচু কোণে থাকার মতো অবস্থায় আপনি 3D ডেটার কোয়ালিটি খারাপ হতে দেখলে স্ট্যান্ডার্ড রেজোলিউশনের দ্বিগুণ মাত্রায় (৩৮৪০x২১৬০) রেন্ডার করার চেষ্টা করুন। এর ফলে রেন্ডার করা ভিডিওটিতে অনেক বেশি স্পষ্টতা থাকবে। আপনি আপনার পছন্দের এডিটিং সফ্টওয়্যারের দ্বারা রেন্ডারটিকে আবার ১০৮০ পিক্সেল রেজোলিউশনে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।

মইরে কমানো

সুপারস্যাম্পেলিং কৌশলটি বহুতলগুলির জানালায় দেখতে পাওয়া ঝিকমিক করা মইরে প্যাটার্নের মতো জটিল বারবার দেখা যাওয়া টেক্সচারগুলি কমাতেও সাহায্য করতে পারে।

আকৃতি এবং লেবেল যোগ করা

ওভারলে আপনাকে KML ফর্ম্যাট ব্যবহার করে সীমানা, আকৃতি এবং টেক্সট যোগ করতে দেয়। KML সম্বন্ধে আরও জানুন

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, রেন্ডার করার পরে আপনার ছবিতে এই উপাদানগুলি যোগ করার জন্য কম্পোজ করার সফ্টওয়্যার ব্যবহার করার তুলনায় এটি ব্যবহার করা সহজ এবং সুবিধাজনক হতে পারে। এটি আপনাকে স্টাইল করার উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয় এবং পাথের উপর আঁকার মতো অনেক বেশি জটিল প্রভাবগুলি তৈরি করতে দেয়। 3D ক্যামেরা এক্সপোর্ট এই প্রসেসটিকে আরও দ্রুত ও সহজ করে তোলে।